গলাচিপা প্রতিনিধি ॥ গলাচিপা উপজেলার বোয়ালিয়া স্পিডবোট ও খেয়াঘাটের স্থান নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে দুই ইজাদারের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের দেওয়া ইজিরাকে কেন্দ্র করে চলমান শঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার স্পিডবোট ও খেয়াঘাটের ইজারাদারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এতে দুই পক্ষের কমপক্ষে ছয় জন আহত হয়। এ সমস্যা থেকেই দুই পক্ষই সমাধান চাইছেন। এ ঘটনায় শনিবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা সরেজমিনে আসবেন বলে জানা গেছে। পটুয়াখালী জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার বোয়ালিয়া স্লুইসঘাট সংলগ্ন এলাকায় বোয়ালিয়া-কোড়ালিয়া (রাঙ্গাবালী) খেয়াঘাট দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এখানে দীর্ঘ বছর পর্যন্ত খেয়াঘাটটি ইজারা দেওয়া হয়নি। এ বছর কোনো কারণবশত এ ঘাটটি পটুয়াখালীর মো. নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ইজারা পান। এ বছর বৈশাখ থেকে শুধু খেয়া নৌকার জন্য তাকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে পটুয়াখালী বিআইডব্লুটিএর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ কর্তৃপক্ষ বিগত প্রায় চার বছর ধরে বোয়ালিয়া স্লুইস বাজার এলাকায় স্পিডবোট ঘাট ইজারা দিয়ে আসছে। এটা বালাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সকল আইন ও নিয়মনীতি মেনেই দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। এ বিষয় জেলা পরিষদ থেকে ইজারাদার মো. নজরুল ইসলামের পক্ষে ঘাট পরিচালনাকারী উম্মে আসমা আখি বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই স্লুইস ঘাট সংলগ্ন এলাকাই খেয়াঘাট ছিল। আমরা খেয়াঘাটে গিয়েছি। স্পিডবোট ঘাটে নয়। স্পিডবোট ঘাট খালের মধ্যে থাকার কথা নয়। এ বিষয় গলাচিপা স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি ওয়ানা মার্জিয়া নিতু বলেন, আমরা বিআইডব্লিউটিএর মাধ্যমে বোয়ালিয়া স্পিডবোট ঘাট ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করেই জেলা পরিষদ থেকে খেয়া ঘাট ইজারা নিয়ে আমাদের স্পিডবোট ঘাটে এসে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে আসছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেও কোনো সমাধান করতে পারেনি। খেয়াঘাট ইজারাদাররা গায়ের জোলে বিভিন্ন সময় ঝামেলা সৃষ্টি করছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। পটুয়াখালী বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দিন খান বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সকল আইন ও নিয়ম নীতি মেনেই গলাচিপার স্পিডবোট ঘাট ইহারা দিয়েছি। পোর্ট এক্ট অনুযায়ী নদী নিয়ন্ত্রণ, ল্যান্ডিং ফেসিলিটি, ঘাট পয়েন্ট তৈরি ও পরিচালনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ আইন মেনেই আমরা তা করেছি। এ ছাড়া নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের দেওয়া ঘাটের এ কিলোমিটারের মধ্যে অন্য কোনো ঘাট থাকতে পারবে না। তবে বিষয়টি স্থানীয় ইজারাদার সমস্যার সৃষ্টি করছে বলে ধারণা করছি। এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বোয়ালিয়ার এ ঘাটটি পরিত্যক্ত ছিল। এবছর পটুয়াখালীর মো. নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ইজারা নেয়। এর পর থেকেই শুনছি স্পিডবোট ও খেয়াঘাট ইজারাদারদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে। শনিবার আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। গলাচিপা থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, শনিবার জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষ আসবে। আশাকরি শনিবার বিরোধের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।
Leave a Reply